লাল চন্দন/ Lal Chandon
লাল চন্দন/ Lal Chandon
লাল চন্দন যার বৈজ্ঞানিক নাম Adenanthera pavonina। বাংলায় লাল চন্দনকে রঞ্জনা নামেও পরিচয় আছে এবং ইংরেজিতে এটি পরিচিত রেড সেন্ডাল নামে, এছাড়াও আরও অনেক নামে পরিচিত এই গাছটি। লাল চন্দন গাছ চাষ করা যায় না বা চাষ করলেও এটি হয় না। প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেয়া এক একটি গাছ পরিপক্ক হতে সময় লাগে কয়েকশ বছর। আবার বাজারে চাহিদা থাকায় এর দামও অনেক।
লাল চন্দন গাছ সাধারণত ৮ মিটার থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত উচু হয়ে থাকে। লাল চন্দন গাছের পাতা গুলো দেখতে অবিকল জাম পাতার মত। চন্দন সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে সেতু চন্দন এবং লাল বা লোহিত চন্দন। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সেতু চন্দন পাওয়া গেলেও লাল চন্দন পাওয়াটা খুবই দুর্বল। সাদা চন্দনে সু-গ্রান থাকলেও লাল চন্দনে কোন গন্ধ নেই। কিন্তু কাঠের বিশেষ গুনের কারনে বিশ্ব জুরে এর চাহিদা ব্যাপক। সেতু চন্দন চাষ করা গেলেও লাল চন্দন গাছ চাষ করা যায় না। ধারনা কর হয় চন্দন গাছ ভারতিয়। রামায়ন, মহাভারত, এমন কি কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রতে এই কাঠের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে অনেকের ধারনা লাল চন্দন গাছের আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়ার ত্রিনুক দ্বীপে। রক্ত চন্দন/লাল চন্দনের প্রধান গ্রাহক চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান, সিংগাপুর, এবং অস্টেলিয়া। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা চীনের বাজারে। আর তাই এই কাঠটি পাচারও হয় চীনে বেশি।
পৃথিবীতে যতগুলো দামি কাঠ রয়েছে তার ভিতরে সবচেয়ে দামি কাঠে গুলোর মধ্যে একটি এই লাল চন্দন। প্রতি কেজি চন্দন কাঠ বিক্রি হয় প্রায় ১০,০০০ (দশ) হাজার টাকারও বেশি দামে তাহলে চিন্তা করে দেখুন কেন এই কাঠের এত চাহিদা বর্তমান বিশ্বে। এতটা দামি হওয়ার কারনে এই কাঠ অদিকাল থেকে লাল সোনা নামেও পরিচিত পেয়ে আসছে। লাল চন্দন কাঠ খুবই বিখ্যাত কাঠ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কাঠ, যেটি সচারাচর পাওয়াটাও খুবই দুস্প্রাপ্য ব্যাপার। অত্যান্ত মূল্যবান এ কাঠ একটি সময় এত পরিমানে কেটে উজার করা হয়েছে যে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত প্রায় অল্প কিছু শতাংশ এই লাল চন্দন কাঠ গাছ অবশিষ্ট রয়েছে। কিন্তু আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে কি এই লাল চন্দন কাঠ? আর কিসে এর ব্যবহার রয়েছে? আর কেনোইবা এর দাম আকাশ চুম্বি? এমন অনেক প্রশ্ন গুরপাক খাচ্ছে আমাদের মনের মধ্যে।
দক্ষিন ভারতের তামিল দাড়ুর প্রদেশে এ গাছ পাওয়া যায় । তামিল নাড়ুর সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকার তুমুল, নেংড়া, চিত্তুর পাহাড়ে এটি জন্মিয়ে থাকে। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর এই পাহাড়ি এলাকার পাহাড়ে পাহাড়ে বিভিন্ন গাছ পালার সাথে জন্ম এই লাল চন্দন গাছ। আবহাওয়া এবং মাটির গুনাগুনের তারতম্যের কারনে বিশেষ কিছু পাহাড়ি অঞ্চল ছাড়া এ গাছ অন্য কোথাও জন্মায় না। সামান্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তামপাত্রার তারতম্যের কারনেই মারা যেতে পারে এ গাছ।
মূলত আয়ূরবেদিক চিকিৎসার ঔষধ হিসেবে এই কাঠের ব্যবহার ব্যপক আকারে। প্রাচীন কাল থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপাদান উপকরন এই কাঠ। এছাড়াও দামি ভাস্কর্য, বাদ্যযন্ত্র এবং বিলাসবহুল আসবাব পত্রের জন্য এ কাঠ বিখ্যাত।
লাল চন্দনের উপকারিতা |
- ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়
- প্রসাবে জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধান
- জ্বর কমায়
- হার্ট ভালো রাখ
- বমি সমস্যা দূর করে ইত্যাদি
লাল চন্দনের পার্শ্ব প্রতিকৃয়া |
এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক গবেষনায় চন্দনের কোন পার্শ্ব প্রতিকৃয়া পাওয়া যায়নি। মানুষ জন যে সকল পার্শ্বা প্রতিকৃয়ার কথা কলে থাকে তা সম্পূর্ণ ধারণার উপর বলে থাকে। তবে গর্ভবতী বা যাহারা শিশুদের দুধ পান করান তাদের উচিত চন্দন খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
লাল চন্দন/ Lal Chandon লাল চন্দন/ Lal Chandon লাল চন্দন/ Lal Chandon লাল চন্দন/ Lal Chandon লাল চন্দন/ Lal Chandon
Pingback: নিম পাতার গুনাগুন - সময়ের সংলাপ