HealthLifestyle

বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার 30

Spread the love

বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার

আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার, না হয় বর কনের ব্লাড গ্রুপ মিলে গেলে নানান ধরণের জটিল সমস্যা হতে পারে। আসলে কি এমন সমস্যা হতে পারে? সত্যি কি বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার ? এমন প্রচলিত কথার বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কি বলে? সত্যি কি এমন কথার ভিক্তি আছে? না, এমন ধারণাটি একদম ভুল। ব্লাড গ্রুপ মিলে গেলে এমন কোন সমস্যা হয়না । তবে বিয়ের আগে বর কনের ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করা অত্যান্ত জরুরী একটি বিষয়।

আসলে কেন এটা জরুরী ? আগে জেনে নেই রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে। প্রধানত ব্লাড গ্রুপ কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি হলো ABO system (A,B, AB এবং O ), অন্যটি হলো  Rh factor {Rh positive (+ve) & Rg negative(-ve)} অর্থাৎ Rh factor ঠিক করবে ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ হবে না নেগেটিভ হবে।

বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার কেন?

যখর কোন Rh নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিকে Rh পজেটিভ গ্রুপের ব্লাড দেয়া হয় তখন প্রথমবারে সাধারণত কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এর বিরুদ্ধে রোগীর শরীরে এন্টিবডি তৈরী হবে। ফলে রোগী যদি আবার কখনও পজেটিভ ব্লাড শরীরে নেয় তাহলে তার ব্লাড Call  গুলো ভেঙ্গে যাবে, এবং মারাত্বক সমস্যা দেখা দেবে। যেমন জ্বর, কিডনি ফেইলিউর, হঠাৎ মৃত্যু ইত্যাদি। এই সমস্যাকে মেডিকেল টার্ম এ বলা হয় ABO incompatibility ।

তাহলে প্রশ্ন হলো স্বামী/ স্ত্রীর ব্লাড কি রকম হওয়া দরকার?

যদি স্বামীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ ব্লাড গ্রুপ গওয়া দরকার । কোনভাবেই স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ নেগেটিভ হওয়া চলবে না। অর্থাৎ একজন নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের নারীর কেবলা একজন নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের পুরুষকে বিয়ে করাই নিরাপদ। (তথ্য সূত্রঃ- আমার স্বাস্থ্য আমার সুখ )

বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার 30
বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার 30

যদি স্বামীর ব্লাড গ্রুপ নেগেটিভ হয়ে এবং স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ হয় তাহলে কি সমস্যা হয়?

রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোন সমস্যা হয় না । তবে ভিন্ন ব্লাড গ্রুপে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী জদি পজেটিভ হয় তাহলে সন্তান জন্মের সময়ে লিথাল জিন বা মারন জিন নামে  একটি জিন তৈরী হয় যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাঁধা দেয় বা জাইগোট মেরে ফেলে। সে ক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হয়। যদি ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ হয় তাহলে সাধারনত বাচ্চার ব্লাহগ্রুপও পজেটিভ হবে। যখন কোন নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের মা ধারন করবে পজেটিভ ভ্রুন তখন সাধারনত প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু ডেলিভারির সময়ে পজেটিভ Fetus  এর ব্লাড Placental barrier ভেদ করে এবং placental displacement এর সময় মায়ের শরীরে প্রবেশ করবে। মায়ের শরীরে ডেলিভারির সময় যে ব্লাড প্রবেশ করবে তা ডেলিভারি হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই মায়োর শরীরে Rh এন্টিবডি তৈরী করবে। এবং সমস্যা হবে দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রে। যখন মা দ্বিতীয় সন্তান বহন করবে, তখন যদি তার fetus এর ব্লাড গ্রুপ পুনরায় পজেটিভ হয় তাহলে মায়ের শরীরে আগে যে Rh এন্টিবডি তৈরী হয়েছিলো সেটা placental barrier ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন fetus এর শরীরে Rh এন্টিবডি তৈরী হয়েছিলো সেটা placental barrier ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন fetus এর শরীরে Rh antibody ঢুকবে তখন fetal এর RBC এর সাথে agglutination হবে। যার ফলে RBC ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ শিশু মারা যাবে।

বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার –এর কারন হলো বর কনে উভয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কিনা সেটা জানা যাবে। এছাড়াও হেপাটাইটিস-বি এক মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি। পাত্র বা পাত্রী যে কোন একজনের দেহে এর ভাইরাস থাকলে অন্যজন আক্রান্ত হবে। অনাগত সন্তানকেও করবে সংক্রমিত। পৃথিবীর অন্যতম ঘাতক ব্যাধি এটি। তাই বিয়ের আগেই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত পাত্র-পাত্রীর হেপাটাইটিস-বি আছে কিনা। রক্তের পরীক্ষা করে দেখতে হবে পাত্র-পাত্রী সিফিলিসের জীবাণু বহন করছে কি না। ভিডিআরএল পরীক্ষায় সেটা ধরা পড়বে। সিফিলিসে আক্রান্ত বাবা-মায়ের সন্তান বিকলাঙ্গ হতে পারে ।পাত্র-পাত্রী থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে তাদের সন্তানও এ রোগে আক্রান্ত হবে। রক্ত পরীক্ষা করিয়ে দেখতে হবে পাত্র-পাত্রী থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না এসব কারনেই বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার। (অরুনা মোস্তফা)

2 thoughts on “বিয়ের আগে স্বামী/স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার 30

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *