নীল নদে কেন যুবতী নারী বলি দেয়া হতো
নীল নদে কেন যুবতী নারী বলি দেয়া হতো
আফ্রিকা মহাদেশের একটি অন্যতম নদ হলো নীল নদ। নীল নদ যা স্থানীয় ভাষায় আবায় নদ বা আব্বে নামেও পরিচিত । প্রায় ৬,৮৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নীল নদ বিশ্বের দীর্ঘতম নদী হিসেবে স্বীকৃত। এর দুইটি উপনদ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ। এর মধ্যে শ্বেত নীল নদ দীর্ঘতর। নীল নদের উত্তরাংশ সুদানে শুরু হয়ে মিশরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভূ-মধ্যসাগরে গিয়ে মিশেছে। মিশরের সভ্যতা প্রাচীন কাল থেকেই নীলের উপর নির্ভরশীল। মিশরের জনসংখ্যার অধিকাংশ এবং বেশিরভাগ শহরের অবস্থান উত্তরে নীলনদের উপত্যকায়। প্রাচীন মিশরের প্রায় সমস্ত সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও এর তীরেই অবস্থিত। গ্রীষ্মের সময় আবায় নদে যখন বন্যা হয় তখন ইথিওপিয়ার উচ্চভূমি থেকে প্রচুর পলি, কাদা ও উর্বর মৃত্তিকা সংগ্রহ করে এই নদের জল নিম্ন অববাহিকার দিকে প্রবাহিত হয় এবং এর ফলে নদের জল কালো ও বাদামি বর্ণ ধারণ করে ।
এটি পৃথিবীর একমাত্র নদ, যা দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। মিসরের নীল নদ সে দেশের কৃষিকার্যের প্রধানতম উৎস। কিন্তু উক্ত নদ প্রতি বছর শুকিয়ে যেত।তখন সে দেশের অধিবাসীরা প্রাচীন প্রথানুযায়ী একটি সুন্দরী কুমারীকে নীল নদের বুকে বলি দান করতো। ফলে নীল নদ পূর্বের ন্যায় প্রবাহিত হত।
এ প্রসঙ্গে বলা যায়- কালের বিবর্তনে নীল নদের পানি ব্যবস্থাপনা জিনদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। তারা প্রতি বছর নীল নদের পানি আটকিয়ে কৃষককুলকে জিম্মি করে রাখতো। প্রতি বছর একটি সুন্দরী নারীকে নীল নদে বলি দানের বিনিময়ে তারা পানি ছেড়ে দিত।
পরবর্তীকালে হযরত ওমর (রাঃ) এর আমলে মিসরে ইসলামের পতাকা উড্ডীন হয়। সেখানকার প্রাদেশিক শাসনকর্তা হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এ অবৈধ কার্যের প্রতি হস্তক্ষেপ করে তা বন্ধ করে দেন। ফলে প্রতি বছরের মত নীল নদের পানি শুকিয়ে যায়।এদিকে নও মুসলিম কৃষকরা সুন্দরী নারী বলি দানের রেওয়াজ চালু রাখবে কিনা, এ ব্যাপারে হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর অভিমত জানতে চাইলে তিনি খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এর নিকট এক নাতিদীর্ঘ পত্র লেখেন। পত্র পেয়ে হযরত ওমর (রাঃ) বিস্তারিত অবগত হলেন এবং ঐ চিঠির অপর পৃষ্ঠায় নীল নদকে সম্বোধন করে হযরত ওমর (রাঃ) লিখলেনঃ (হে মিসরের নীল দরিয়া!) যদি তুমি নিজের ইচ্ছায় প্রবাহিত হও, তাহলে তোমার পানি আমাদের প্রয়োজন নেই। তুমি তোমার পানি বুকে ধরে রাখ। আর যদি মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম মোতাবেক প্রবাহিত হও, তবে পানি ধরে রাখার কোন অধিকার তোমার নেই।” হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এ চিঠি নীল নদের বুকে নিক্ষেপ করা মাত্রই নীল নদ জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়ে গেল। আর সেই থেকে আজ পর্যন্ত নীল নদের পানি প্রবাহিত অবস্থায় বিদ্যমান।
নীল নদে কেন যুবতী নারী বলি দেয়া হতো নীল নদে কেন যুবতী নারী বলি দেয়া হতো নীল নদে কেন যুবতী নারী বলি দেয়া হতো নীল নদে কেন যুবতী নারী বলি দেয়া হতো