News

মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত?

মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত?

মোহাম্মদপুরের ইতিহাস ও নামকরণ

বাংলাদেশে স্থাননামকরণের ক্ষেত্রে ‘পুর’ শব্দটি খুবই পরিচিত। ‘পুর’ সাধারণত কোনো বসতি বা শহরের শেষাংশে ব্যবহার করা হয়, যেমন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি-পুর বা নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জপুর। কিন্তু ঢাকার অনেক এলাকার নামের শেষাংশেও দেখা যায় ‘পুর’, এবং এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো মোহাম্মদপুর

মোহাম্মদপুরের নাম এসেছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর নামানুসারে। এই নামকরণ শুধু ঐতিহ্য নয়, বরং মুসলিম সম্প্রদায়ের শ্রদ্ধা ও ভক্তির প্রতিফলন। ঢাকার মোহাম্মদপুর মূলত একটি আবাসিক এলাকা যা ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষের বিভাজনের পর বিশাল সংখ্যক মুসলিম উদ্বাস্তু পাকিস্তানে চলে আসে। তখন ঢাকায় নতুন মানুষদের আবাসনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। অবাঙালি মুসলিম সম্প্রদায় লালমাটিয়ার পাশে একটি এলাকা নির্বাচন করে বসতি স্থাপন করে। এটি ছিল ঢাকার পরিধির বাইরে একটি খোলা স্থান বা ‘চক’–এর মতো এলাকা, যেখানে তারা নতুন জীবন শুরু করতে পারে।

এই আবাসিক এলাকার নামকরণ করা হয় মোহাম্মদপুর। নামকরণের সময় মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্য এবং মহানবীর প্রতি শ্রদ্ধা বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছিল। ১৯৫৮ সালে সরকার স্থায়ীভাবে এই অঞ্চলে তাদের বসবাস নিশ্চিত করে এবং আধুনিক সেবাসহ এলাকার উন্নয়ন শুরু হয়। এরপর থেকে মোহাম্মদপুর ধীরে ধীরে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিণত হয়।

মোহাম্মদপুরে শুরুতে অনেক অবাঙালি মুসলিম পরিবার বসবাস করলেও ধীরে ধীরে এই অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক কমিউনিটি গড়ে ওঠে। আজকের মোহাম্মদপুর ঢাকা শহরের অন্যতম প্রধান ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এটি শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত—এখানে অনেক স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

মোহাম্মদপুরের রাস্তা, বাসস্থান, মার্কেট এবং আবাসিক এলাকাগুলো আধুনিক নগর পরিকল্পনার সঙ্গে খাপ খাইয়ে এগিয়েছে। নামকরণ ও ইতিহাসের কারণে আজও স্থানীয় মানুষদের মনে রয়েছে এই এলাকার প্রাচীন পরিচয়। নামের সঙ্গে আবাসিক ও সামাজিক ইতিহাস জড়িত থাকায় মোহাম্মদপুর শুধু একটি আবাসিক এলাকা নয়, বরং ঢাকার মুসলিম ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

সংক্ষেপে, মোহাম্মদপুর নামের অর্থ ও গুরুত্ব কেবল নামকরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ঢাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের ইতিহাস, ভারত-বিভাগের পর আবাসিক পুনর্বিন্যাস এবং সমাজিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আজও সমাদৃত। ১৯৪৭ সালে উদ্বাস্তু মুসলিমদের বসতি স্থাপন, ১৯৫৮ সালে স্থায়ী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা এবং ধীরে ধীরে শিক্ষাব্যবস্থা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠা—এসব মিলিয়ে মোহাম্মদপুর আজ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত।

মোহাম্মদপুরের ইতিহাস শুধুমাত্র স্থাননামকরণের গল্প নয়, বরং এটি ঢাকার সামাজিক, ঐতিহ্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি অংশ। এখানকার মানুষের জীবিকা, শিক্ষা ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সব মিলিয়ে ঢাকার প্রাণবন্ত শহর জীবনের প্রতিফলন ঘটায়।

মিরপুর নামকরণের ইতিহাস

বংশাল নামকরণের ইতিহাস

ওয়ারী নামকরণের ইতিহাস

ফার্মগেট নামকরণের ইতিহাস

ফরাশগঞ্জ নামকরণের ইতিহাস

চকবাজার নামকরণের ইতিহাস

কারওয়ান বাজার নামকরণের ইতিহাস

পরীবাগ নামকরণের ইতিহাস

আজিমপুর নামকরণের ইতিহাস

ভূতের গলি নামকরণের ইতিহাস

শ্যামলী নামকরণের ইতিহাস

রমনা নামকরণের ইতিহাস

পিলখানা নামকরণের ইতিহাস

গেন্ডারিয়া নামকরণের ইতিহাস

মগবাজার নামকরণের ইতিহাস

ধানমন্ডি নামের নাম করনের ইতিহাস

ইংলিশ রোড ও ফ্রেঞ্চ রোড নামকরণের ইতিহাস

সময়ের সংলাপের ফেইসবুক গ্রুপ

সময়ের সংলাপের ফেইসবুক পেইজ

মালিবাগ নামকরণের ইতিহাস

মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত? মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত? মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত? মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত? মোহাম্মদপুর কেন এমন নামে পরিচিত?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *