Health

চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার

চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার

চোখ মানুষের শরীরের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। প্রতিদিন ধুলাবালি, দূষণ, আলো, স্ক্রিনের ব্যবহারের চাপ—এসব কারণে চোখ অনেক সময় অস্বস্তি অনুভব করে। তার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হলো চোখে জ্বালা-পোড়া, যা বয়স, পরিবেশ, অভ্যাস ও শারীরিক পরিস্থিতির কারণে হতে পারে। চোখে হঠাৎ বা দীর্ঘমেয়াদি জ্বালা–পোড়ার পেছনে নানা কারণ লুকিয়ে থাকতে পারে। নিচে সেগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।


১. চোখের শুষ্কতা (Dry Eye Syndrome)

চোখে জ্বালা–পোড়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো শুষ্কতা। আধুনিক স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ট্যাব ব্যবহারকারীর মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে চেয়ে থাকা চোখের স্বাভাবিক পলক ফেলাকে কমিয়ে দেয়। ফলে চোখে পর্যাপ্ত অশ্রু উৎপাদন হয় না এবং চোখ শুষ্ক হওয়ার কারণে জ্বালা-পোড়া অনুভূত হয়।
শুষ্ক আবহাওয়া, এসি রুমে বেশি সময় থাকা বা বেশি দেরি ঘুমানোর কারণেও চোখ শুকিয়ে যেতে পারে।


২. অ্যালার্জি (Allergic Conjunctivitis)

ধুলা, ফুলের রেণু, পশুর লোম, ধোঁয়া, কেমিক্যাল, প্রসাধনী—এসব থেকে অ্যালার্জি হলে চোখে জ্বালা–পোড়া শুরু হতে পারে। অ্যালার্জি হলে সাধারণত চোখ লাল হওয়া, পানি পড়া, চোখে চুলকানি, পাপড়ি ভারী লাগা ইত্যাদি উপসর্গও দেখা দেয়।


৩. ধুলাবালি ও দূষণ

রাস্তাঘাটের ধুলাবালি, যানবাহনের ধোঁয়া, নির্মাণকার্যস্থলের ময়লা—এসব চোখে লাগলে তাৎক্ষণিকভাবে জ্বালা–পোড়া হতে পারে। বাহিরে গেলে চোখে ধুলা ঢুকে গেলে চোখের ভেতরে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, ফলে অস্বস্তি বাড়ে।


৪. কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের সমস্যা

যারা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তারা অনেক সময় চোখে জ্বালা–পোড়া অনুভব করেন। এর কারণ হতে পারে—

  • লেন্স বেশি সময় ধরে ব্যবহার
  • লেন্সের ওপর জমে থাকা প্রোটিন
  • মেয়াদোত্তীর্ণ লেন্স
  • অস্বাস্থ্যকর লেন্স সল্যুশন
  • ভুলভাবে লেন্স পরা বা খোলা

এসব কারণে চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে জ্বালা–পোড়া হতে পারে।


৫. ইনফেকশন (Conjunctivitis / Eye Flu)

ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা চোখে সংক্রমণ হলে চোখ লাল হয়ে যায় এবং জ্বালা–পোড়া করে। বিশেষ করে “আই ফ্লু” হলে চুলকানি, পানি পড়া, আলোতে তাকালে অস্বস্তি—এসব লক্ষণ প্রকাশ পায়। শিশুরা এবং স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এটি দ্রুত ছড়ায়।


৬. ঘুমের অভাব ও ক্লান্তি

অনেক সময় রাত জাগা, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া বা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর কারণে চোখে টান ধরা ও জ্বালা–পোড়া দেখা যায়। ঘুম কম হলে চোখের পেশী ঠিকমতো বিশ্রাম পায় না, ফলে অস্বস্তি জন্মায়।


৭. কেমিক্যাল বা প্রসাধনীর প্রভাব

চোখের কাজল, আইলাইনার, মাসকারা, ফাউন্ডেশন বা চোখের চারপাশে ব্যবহৃত প্রসাধনীতে থাকা কেমিক্যাল কখনও কখনও চোখে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। সাবান, শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট চোখে গেলে তা অত্যন্ত জ্বালা–পোড়া তৈরি করে।


৮. অতিবেগুনি রশ্মি (UV Light)

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে চোখ সুরক্ষিত না থাকলে দীর্ঘমেয়াদে জ্বালা, দৃষ্টি ঘোলা হওয়া বা চোখ পানি ঝরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা রোদে কাজ করেন বা নিয়মিত রোদে চলাচল করেন তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি।


৯. চোখে বিদেশি বস্তু ঢোকা

চুল, ধুলা, পাপড়ি, ছোট কণা—এসব চোখে ঢুকলে তাৎক্ষণিকভাবে তীব্র জ্বালা–পোড়া অনুভূত হয়।


১০. কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম (CVS)

দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে চোখে চাপ পড়ে। ফলে মাথা ব্যথা, দৃষ্টিভ্রম, চোখ জ্বালা, ফোকাস করতে সমস্যা—এসব লক্ষণ দেখা যায়।


উপসংহার

চোখে জ্বালা–পোড়া সাধারণ সমস্যা হলেও এর কারণ নানাবিধ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সামান্য বিশ্রাম, চোখ ধোয়া, স্ক্রিন ব্যবহারে বিরতি নিলে সমস্যা কমে যায়। তবে যদি জ্বালা–পোড়ার সঙ্গে চোখ লাল হওয়া, পানি পড়া, দৃষ্টি ঝাপসা, তীব্র আলোভীতি থাকে—তাহলে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ চোখ হলো শরীরের সবচেয়ে মূল্যবান অঙ্গ, তাই অবহেলা একদমই করা উচিত নয়।

চো

দেশে প্রথমবারের মতো শনাক্ত ‘Genotype IIIb’ ভাইরাস

আরও শক্তিশালী হচ্ছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর

ঢাকা মেট্রোরেল (MRT Line-6) — বিস্তৃত বিশ্লেষণ

ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON)

খিরনিগাছ: পরিচিতি ব্যবহার ও উপকারিতা

খাবার হজম প্রক্রিয়া: ধাপ, কৌশল এবং হজম উন্নত করার বৈজ্ঞানিক উপায়

কাঁচা হলুদের ১০০টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা

সময় সংলাপ ফেইসবুক পেইজ

চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার চোখে আগুনের মতো জ্বালা কি বলে ডাক্তার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *