ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON)
1. পরিচিতি ও সারসংক্ষেপ
International Society for Krishna Consciousness (প্রচলিত নাম: ISKCON বা হরেকৃষ্ণ মুভমেন্ট) একটি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংস্থা যা ভৈষ্ণব ধারার (Gaudiya Vaishnavism) ওপর ভিত্তি করে গঠিত। ১৯৬৬ সালে A. C. Bhaktivedanta Swami Prabhupada নিউ ইয়র্কে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো কৃষ্ণ‑চিন্তন প্রচার, ভক্তি‑ভিত্তিক জীবনযাপন, ধর্মীয় শিক্ষা ও সামাজিক সেবা।
2. প্রতিষ্ঠা ও দৃষ্টিভঙ্গি
ISKCON‑এর দৃষ্টিভঙ্গি হল কৃষ্ণকে সর্বশ্রেষ্ঠ দেবতা মানা এবং ভক্তিভিত্তিক চর্চায় জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজা। Srila Prabhupada‑র অনুশাসনে এই আন্দোলন দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ISKCON বই প্রকাশ, প্রতিদিনের জপাচ্ছন্নতা (মন্ত্র পাঠ), কীর্তন ও সাধারণ ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কাজ করে।
3. মৌলিক কার্যকলাপ
ISKCON‑এর সাধারণ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:
- ভক্তি‑চর্চা: হারেকৃষ্ণ মন্ত্র উচ্চারণ, কীর্তন ও উপদেশ সেশন।
- ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রকাশনা: Bhaktivedanta Book Trust-এর মতো প্রকাশনা কেন্দ্র থেকে গ্রন্থপ্রকাশ।
- সামাজিক সেবা: নিরামিষ খাদ্য (prasadam) বিতরণ, দুর্যোগে সহায়তা, শিক্ষা উদ্যোগ।
- উৎসব উদযাপন: Janmashtami, রথ‑যাত্রা প্রভৃতি ধর্মীয় উৎসব।
4. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে ISKCON‑এর কার্যক্রম প্রধানত হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়ানো এবং ঢাকার স্বামীবাগ সহ বিভিন্ন স্থানে মন্দির, কেন্দ্র ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড রয়েছে। স্থানীয় কন্টেক্সটে ISKCON সামাজিক ও ধর্মীয় কাজ করে থাকে—কিন্তু মাঝে মাঝে বিতর্কও দেখা যায়।
4.1 প্রারম্ভিক প্রসার
ঢাকার স্বামীবাগ (Swamibagh) মন্দির ISKCON‑এর পরিচিত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি। স্থানীয়ভাবে মন্দির ও শিক্ষা‑কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।
4.2 স্থানীয় সংযোগ ও প্রসার
ISKCON‑বাংলাদেশ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় প্রোগ্রাম ও জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছে।
5. সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ISKCON‑এর গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো হলো:
- খাদ্য ও সেবা কার্যক্রম: Free prasâdam বা নিরামিষ খাবার বিতরণ; দুর্যোগে খাদ্য ও আশ্রয় সহায়তা প্রদান।
- শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ: স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক কর্মশালা, ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র।
- উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: Janmashtami, কীর্তন মেলা, রথ‑যাত্রা ইত্যাদি।
- সংখ্যালঘু সুরক্ষা: হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি ও সমর্থন।
6. চ্যালেঞ্জ, বিতর্ক ও সাম্প্রতিক ঘটনা
ISKCON‑কে কখনো কখনো সরকারের নীতি, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বা সামাজিক সন্দেহের কারণে প্রশ্নে তুলা হয়েছে। গত কয়েক বছরে কিছু বিতর্কিত ঘটনা ও অভিযোগ সংবাদে উঠে এসেছিল; একই সঙ্গে আইনি ও সামাজিক ভাবে এসব বিষয় সমাধানের চেষ্টা হয়েছে।
সাম্প্রতিক উল্লেখযোগ্য ঘটনা (সংক্ষেপ)
২০২৪‑২০২৫ সালের সময়ে কিছু স্থানীয় ঘটনা ISKCON‑কে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে—তবে আদালত ও স্থানীয় কেন্দ্রগুলো পক্ষপাতমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। স্থানীয় সম্প্রদায়‑নিরাপত্তা এবং সংবেদনশীল সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে ISKCON‑এর কাজ ভবিষ্যতে আরও সতর্ক ও সহযোগিতামূলক হতে হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
উপসংহার
ISKCON একটি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন, যা কৃষ্ণ‑ভক্তি, সামাজিক সেবা ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে কাজ করে। বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম ধর্মীয়‑সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়াতে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সেবায় ভূমিকা রাখছে, তবে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় তাদের কাজ আরও সংহত ও স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন।
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON) ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON) ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON) ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON) ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসন (ISKCON)
ইসকন




