Health

অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক 890

Spread the love

অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক

ডা. আরিফ মাহমুদ

ভারতে নতুন আতঙ্ক: অ্যাডিনো ভাইরাস

গত কয়েকদিনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হঠাৎ করেই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১১ জন মারা গেছে, যাদের বেশিরভাগই শিশু। তবে শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে আসা ৯০ জনেরই শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ (রেসপিরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশন) দেখা যাচ্ছে।

দেশে ছড়াতে শুরু করেছে, অ্যাডিনো ভাইরাস। দীর্ঘ মেয়াদী সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন, শিশুসহ বয়স্করাও। তাই এসময়টাতে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ চিকিৎসকদের। তবে অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় আইইডিসিআর।

অ্যাডিনো ভাইরাস একটি ডিএনএ ভাইরাস। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ, সর্দি-কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত শিশু এবং দুর্বল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

অ্যাডিনো ভাইরাসের লক্ষণ:

এই ভাইরাসের সংক্রমণ বছরের যেকোনো সময় হতে পারে এবং এই ভাইরাসকে চিহ্নিত করাও খুব সহজ। ভাইরাসের লক্ষণগুলো নিম্নরূপ:

• সংক্রামিতদের মধ্যে সর্দি কাশি, হাঁচি, জ্বর, গলাব্যথা এবং নিউমোনিয়া দেখা যায়।

• পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ হয়, ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব।

• তীব্র ব্রঙ্কাইটিস।

• মুত্রাশয় সংক্রমণ, মেনিনজাইটিস এবং এনসেফালাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে কী কী লক্ষণ দেখা দিতে পারে–

১। বেশি তাপমাত্রায় জ্বর।
২। শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
৩। চোখ লাল হয়ে কঞ্জাকটিভাইটিস হওয়া।
৪। শরীরে অক্সিজেন লেভেল নিচে নেমে যাওয়া।
৫। প্রস্রাব কমে যাওয়া, কখনো প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
৬। ডায়রিয়া।
৭। মাথাব্যথা, বমি, কাশি ইত্যাদি।

অ্যাডিনো ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবস্থা:



• বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং শিশুদেরও এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

• ভিড় থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

• হাঁচি,কাশি দেয়ার সময় রুমাল অথবা কনুই ব্যবহার করা।

• যেখানে সেখানে থুথু বা কফ না ফেলা।

• যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, হৃদরোগের সমস্যা, জন্মগত অসুখ আছে বা অপুষ্টিতে ভুগছে তাদের প্রতি বাড়তি খেয়াল রাখা।

• অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এবং করমর্দন এড়িয়ে চলা।

• নাক, চোখ এবং মুখে অপ্রয়োজনীয় স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা।

• অন্যের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।

adina

অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী করণীয়: 

সাধারণত এই ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যেহেতু এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই কেউ আক্রান্ত হলে তাকে শিশু, বৃদ্ধা এবং গর্ভবতী নারী থেকে দূরে রাখতে হবে। বারবার গরম পানীয় খেতে দিতে হবে এবং সংক্রমণ গুরুতর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে প্রতিদিনই সর্দি- কাশি, জ্বর নিয়ে অনেককেই হাসপাতালে আসতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সুতরাং আমাদেরও সতর্ক থাকা উচিত। সেইসঙ্গে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি যেমন: মাস্ক পরা, সাবান পানি দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।  লেখক: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং ডিরেক্টর, মেডিক্যাল সার্ভিসেস এভারকেয়ার হসপিটালস, বাংলাদেশ।

পোষ্ট ক্রেডিট:- পেশেন্ট এইড

অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক
অ্যাডিনো ভাইরাস

অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক অ্যাডিনো ভাইরাস ভারতের নতুন আতঙ্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *