স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়াই বাপের বাড়িতে গেলে ভরণপোষণ কী হবে?
স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি ছাড়াই বাপের বাড়িতে উঠে যায়, স্বামী অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও সমস্যা সমাধান হয় না। এমন পরিস্থিতিতে স্বামী প্রায়ই প্রশ্ন করেন: “আইন কি বলে? স্ত্রী নিজ ইচ্ছায় অন্যত্র থাকলেও কি আমাকে ভরণপোষণ দিতে হবে?”
বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১ অনুযায়ী, স্বামীকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কিছু শর্তে স্ত্রী আলাদা থাকলেও ভরণপোষণ পেতে পারে বা হারাতে পারে।
স্ত্রীর ভরণপোষণের অধিকার
- স্বামী তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য, স্ত্রীও এটি পাওয়ার হকদার।
- যদি স্বামী খারাপ ব্যবহার করে, গৃহত্যাগের নির্দেশ দেয় বা বিরোধ তৈরি হয়, তখন স্ত্রী ভিন্ন স্থানে থাকলেও ভরণপোষণ দাবি করতে পারে।
- দেনমোহর দাবি করলে, স্বামী পরিশোধ না করলে স্ত্রী ভিন্ন স্থানে বসবাস করলেও ভরণপোষণ পাবেন। (মো. ইব্রাহিম হোসেন সরকার বনাম মোসা. সোলেমান্নেসা, ১৯৬৭, ১৯ ডি এল আর ৭৫১)
ভরণপোষণ না পাবার শর্ত
- স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়াই তার গৃহ ত্যাগ করলে।
- বন্দিদশায় থাকলে (স্বামীও বন্দিদশায় থাকলে প্রভাব নেই)।
- ধর্মত্যাগ করলে।
- অবাধ্য আচরণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে।
- স্বামীর মৃত্যু ও ইদ্দতের সময় বিশেষ শর্তে ভরণপোষণ সীমিত হতে পারে।
- অপরাধমূলক বা অসঙ্গত কারণে গৃহ ত্যাগ করলে।
- অপহরণ করা হলে বা জোর করে ভরণপোষণ প্রার্থনা করলে পায় না।
ভরণপোষণের পরিমাণ
ভরণপোষণের পরিমাণ স্বামী-স্ত্রীর আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। অনেক নিকাহনামায় নির্দিষ্ট মাসিক পরিমাণ উল্লেখ থাকে। সাধারণত, স্বামীর আয় ও সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী এটি নির্ধারণ করা হয়।
দ্রষ্টব্য: যদি আপনি আইন সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হন, অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। ইনবক্সে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনে বিস্তারিত সমাধান দেয়া সম্ভব।
অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- ভরণপোষণ শুধুমাত্র খাদ্য নয়, বাসস্থান ও পোশাকের জন্যও দিতে হবে।
- স্ত্রী যদি সন্তানের কেয়ার করতে থাকে, ভরণপোষণ বাড়ানো যেতে পারে।
- ভরণপোষণ মাসিক দেওয়া হয়, সাধারণত নগদ বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে।
- কোর্টে মামলা হলে, স্বামীকে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যাকপেমেন্টও দিতে হতে পারে।
- আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেমন শরণার্থী বা বিদেশে অবস্থানরত স্ত্রী, বাংলাদেশি আইন প্রয়োগ সীমিত, কিন্তু মূল নীতি সমান।
উপসংহার
বাংলাদেশের আইন স্পষ্টভাবে বলে: স্বামী তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য, তবে নির্দিষ্ট শর্ত ও অবাধ্য আচরণের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে। এটি আমাদের দেশে দম্পতিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয়। সচেতন থাকুন এবং প্রয়োজন হলে আইনগত সহায়তা নিন।
🔹 CTA: আপনার বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে এই তথ্য শেয়ার করুন, যাতে তারা আইনি সচেতনতা অর্জন করে।





