জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি
জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও অসংখ্য নদ-নদীর প্রবাহের কারণে নদীভাঙন একটি সাধারণ ও প্রাকৃতিক ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে নদীর স্রোত বেড়ে গেলে তীরবর্তী এলাকার জমি ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়। এভাবে ভাঙনের ফলে যে জমি নদীর মধ্যে হারিয়ে যায়, তাকে সিকন্তি জমি বলা হয়। এই জমি একসময় চাষাবাদ বা বসবাসের উপযোগী থাকলেও নদীভাঙনের কারণে তা আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না। সিকন্তি জমি নদীতীরবর্তী মানুষের জীবন ও জীবিকায় বড় প্রভাব ফেলে এবং ভূমি মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতাও সৃষ্টি করে।
সংজ্ঞা:
- নদী ভাঙনের ফলে যে জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায় বা পানির তলে চলে যায়, সেই জমি সিকন্তি জমি।
- এটি সাধারণত নদীর ক্রমবর্ধমান গতিবেগ, বন্যা বা প্রাকৃতিক কারণে ঘটে।
সিকন্তি জমির বৈশিষ্ট্য
- প্রাকৃতিক কারণে ক্ষয়:
- নদী ভাঙন, বন্যা, প্রবল জলপ্রবাহ বা নাব্য বৃদ্ধির ফলে জমি ধ্বংস হয়।
- মালিকানা:
- সিকন্তি জমির মালিকানা মূলত সেই ব্যক্তির হয় যিনি জমিটির ধ্বংসের আগে বৈধভাবে মালিক ছিলেন।
- বিলীন হওয়ার পরও অধিকার সংরক্ষিত:
- যদিও জমি নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে যায়, মালিকানা সম্পূর্ণভাবে হরিয়ে যায় না।
পয়ন্তি হওয়ার শর্ত
বাংলাদেশের জমি আইন অনুযায়ী, সিকন্তি জমি যদি ৩০ বছরের মধ্যে পুনরায় স্বস্থানে বা মূল অবস্থায় ফিরে আসে, তখন এটিকে পয়ন্তি জমি বলা হয়।
- পয়ন্তি জমি: সিকন্তি জমি যখন নদী বা বন্যার কারণে বিলীন হওয়ার পর পুনরায় স্থিতিশীল বা ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ফিরে আসে।
- মালিকানা ফেরত:
- সিকন্তি জমি যদি পয়ন্তি জমি হিসেবে ফিরে আসে, তাহলে সেই জমির মূল মালিক বা তার উত্তরাধিকারীরা পুনরায় জমির মালিকানা লাভ করবেন।
- তবে এটি শর্তসাপেক্ষে, অর্থাৎ আইনানুযায়ী মালিকানা প্রমাণ ও যাচাইয়ের পরে।
আইনগত ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপট
- মূল উদ্দেশ্য:
- নদী ভাঙনের কারণে যেসব জমি বিলীন হয়েছে, সেগুলো পুনরুদ্ধার হলে তা ফের স্বত্বাধিকারীদের প্রদান করা।
- মালিকানা প্রমাণ:
- সিকন্তি জমি মূল মালিক বা উত্তরাধিকারীকে দেওয়ার জন্য নিবন্ধন ও প্রমাণপত্র প্রয়োজন।
- জমির নকশা, খতিয়ান বা দলিল থাকলে মালিকানা সহজে প্রমাণিত হয়।
- সময়সীমা:
- ৩০ বছর হলো নির্দিষ্ট সময়সীমা, এই সময়ের মধ্যে জমি পয়ন্তি না হলে পুনঃস্বত্বাধিকার প্রক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে।
সারসংক্ষেপ
- সিকন্তি জমি: নদী ভাঙনের কারণে নদীর মধ্যে বিলীন হওয়া জমি।
- পয়ন্তি জমি: সিকন্তি জমি যদি ৩০ বছরের মধ্যে পুনরায় স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসে।
- মালিকানা: পয়ন্তি জমি পুনরুদ্ধার হলে মূল মালিক বা তার উত্তরাধিকারীই স্বত্বাধিকারী হবেন, শর্তসাপেক্ষে।
এটি বাংলাদেশে নদীপ্রবাহ ও ভৌগোলিক পরিবর্তনের কারণে জমি আইন এবং ভূমি মালিকানা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারার অংশ।
জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি জানুন নদীভাঙন ও সিকন্তি জমি কি
গুম প্রতিরোধে নতুন অধ্যাদেশ জারি

