মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান
মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান
মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্ত্তত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে ভূমধ্যাধিকারীর নাম ও প্রজার নাম, জমির দাগ নং, পরিমাণ, প্রকৃতি, খাজনার হার ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে সিএস, এসএ এবং আরএস উল্লেখযোগ্য। ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “থতিয়ান” বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক।
খতিয়ানের প্রধান প্রকারভেদ
- মালিকানা খতিয়ান
- জমির প্রকৃত মালিকের নাম উল্লেখ থাকে।
- এই খতিয়ান মূলত মালিকানা প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- ভোগদখল খতিয়ান
- জমির বর্তমান ব্যবহারকারী বা ভোগকারীর নাম থাকে।
- বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষক বা ভাড়াটে জমিদারদের জন্য ব্যবহৃত।
- আয়কর বা রাজস্ব খতিয়ান
- জমির উপর কর বা রাজস্ব হিসাব দেখায়।
- রাজস্ব অফিস বা স্থানীয় প্রশাসনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ।
- জমির পরিমাপ বা সার্ভে খতিয়ান
- জমির পরিমাণ, সীমানা ও অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য থাকে।
- সাধারণত নতুন জমি ক্রয় বা দখলের সময় ব্যবহৃত।
- সংযুক্ত বা সংশোধিত খতিয়ান
- পুরনো খতিয়ান সংশোধন বা সংযোজন করলে তৈরি হয়।
- জমির মালিকানা পরিবর্তন বা দখল হালনাগাদের জন্য ব্যবহার হয়।
খতিয়ান কত প্রকার?
বাংলাদেশে সাধারণত ৪ ধরণের খতিয়ান রয়েছে। যথা-
১. সি. এস খতিয়ান
২. এস. এ খতিয়ান
৩. আর. এস খতিয়ান
৪. বি. এস খতিয়ান / সিটি জরিপ
সি এস খতিয়ানঃ
১৯১০-২০ সনের মধ্যে সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে উহার আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিক দখলকারের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করেন সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত।
.
এস এ খতিয়ানঃ
১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এসএ খতিয়ান নামে পরিচিত। কোনো অঞ্চলে এ খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। বাংলা ১৩৬২ সালে এই খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে বেশির ভাগ মানুষের কাছে এসএ খতিয়ান ৬২র
খতিয়ান নামেও পরিচিত।
আর এস খতিয়ানঃ
একবার জরিপ হওয়ার পর তাতে উল্লেখিত ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে যে জরিপ করা হয় তা আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। দেখা যায় যে, এসএ জরিপের আলোকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেনি। তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ওই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুনরায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। সারাদেশে এখন পর্যন্ত তা সমাপ্ত না হলেও অনেক জেলাতেই আরএস খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
সরকারি আমিনরা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে জমি মাপামাপি করে এই খতিয়ান প্রস্তুত করেন বলে তাতে ভুলত্রুটি কম লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এই খতিয়ান বি এস খতিয়ান নামেও পরিচিত।
.
বি এস খতিয়ানঃ
সর্বশেষ এই জরিপ ১৯৯০ সা পরিচালিত হয়। ঢাকা অঞ্চলে মহানগর জরিপ হিসাবেও পরিচিত।
মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান মালিকানা ভোগদখল ও রাজস্ব খতিয়ান

