ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন
ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন
আজ আপনার সময় ভালো যাচ্ছেনা, অন্যের সময় ভালো যাচ্ছে, আপনি হতাশ, আপনার মন খারাপ, এই সকল কিছুই আল্লাহর ইচ্ছা। আপনার সফলতা তখনই আসবে যখন আপনি পুরোপুরি আল্লাহ তা’আলার উপর বিশ্বাস করবেন। আপনার জীবনের প্রতিটা সিদ্ধান্ত যখন আল্লাহর উপর ছেড়ে দিবেন তখন আর কোনো কিছুর জন্য আপনাকে পেরাশন হতে হবেনা। মনে রাখবেন, মুমিন কখনো হতাশ হয়না, বরং মুমিন যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিতে আল্লাহকে স্মরণ রাখে। ধৈর্য এমন একটা জিনিস যা মানুষকে শক্তিশালী করে তুলে। ধৈর্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলেন— ‘হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং ধৈর্য ধারণে প্রতিযোগিতা কর’। (সূরা আলে ইমরান, ২০০)
তোমরা সময়কে গালি গালাজ করোনা কারণ, আল্লাহ সময়ের পরিবর্তনকারী’। (সহীহ মুসলিম, ৫৭৫৯)
‘কেবল ধৈর্যশীলদেরকেই তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে দেয়া হবে কোন হিসাব ছাড়াই’। (সূরা যূমার, ১০)
‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধনপ্রাণ এবং ফলের (ফসলের) লোকসান দ্বারা পরীক্ষা করব; আর তুমি ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ দাও’। (সূরা বাকারাহ, ১৫৫)
আরও পড়ুনঃ- স্ত্রীর সাথে সহবাসে স্ত্রী অনুমতি নিতে হবে?
অতি সহজেই যেই জিনিসটা পাওয়া হয় তার প্রতি আকর্ষণ কম ই থাকবে এটা স্বাভাবিক। যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা ধনী বানিয়েছেন প্রভাবশালী বানিয়েছেন, যাদের বাড়ি গাড়ি টাকার অভাব নেই। ব্যবসা ভালো, চাকুরী ভালো, এইসব কিছুই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার পরিক্ষা মাত্র। ধন সম্পদ, অবস্থান, ক্ষমতা, ক্ষ্যাতি দিয়ে তিনি মানুষকে পরিক্ষা করেন।
সেই দুঃখকে ভালোবাসতে শিখুন যেই দুঃখ আপনাকে আপনার রবের আরো কাছে নিয়ে যায়। কেননা মানুষ যখন কস্টে থাকে তখন সে তার রবকে আরো বেশি ডাকে। তাই ধৈর্য ধরতে শিখুন। কস্টকে ভালোবাসতে শিখুন।
হাদিসে বর্নিত আছে— রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফোটে, এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন’। (বুখারি, ৫৬৪১)
ধৈর্য্য মানুষের জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুণ। এটি এমন এক শক্তি, যা মানুষকে কঠিন পরিস্থিতিতেও স্থির থাকতে সাহায্য করে এবং সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগায়। ধৈর্য্য ছাড়া কোনো বড় লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে ধৈর্য্য আমাদের পথচলার সঙ্গী হয়ে থাকে।
ধৈর্য্য আমাদের শেখায় অপেক্ষা করতে। সবকিছুই সময় নিয়ে ঘটে, রাতারাতি সাফল্য আসে না। একটি বীজ যেমন ধীরে ধীরে অঙ্কুরিত হয়ে বৃক্ষে পরিণত হয়, তেমনি মানুষের স্বপ্নও ধৈর্য্যের সেচে বাস্তব রূপ লাভ করে। তাই বলা হয়, “ধৈর্য্যের ফল সবসময় মিষ্টি।” এই উক্তিটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আজ কষ্ট হলেও আগামীতে তার সুফল নিশ্চিত।
জীবনের সমস্যাগুলো ধৈর্য্যের পরীক্ষাই নেয়। ব্যর্থতা, অপমান বা দুঃখ যখন সামনে আসে, তখন ধৈর্য্য মানুষকে ভেঙে পড়তে দেয় না। বরং এটি সাহস জোগায় নতুন করে দাঁড়ানোর। একটি অনুপ্রেরণামূলক উক্তি হলো—“ধৈর্য্য হারালে সব হারায়, ধৈর্য্য ধরলে সব পাওয়া যায়।” এই কথাটি আমাদের সংকটের মুহূর্তে শক্ত করে ধরে রাখে।
ধৈর্য্য আত্মনিয়ন্ত্রণেরও প্রতীক। রাগ, হতাশা কিংবা ভয়—এই অনুভূতিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে ধৈর্য্যের বিকল্প নেই। “ধৈর্য্য এমন একটি নীরব শক্তি, যা ঝড়ের মাঝেও মানুষকে স্থির রাখে।” এই উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে নীরবতায়ও অসীম শক্তি লুকিয়ে থাকে।
সাফল্যের গল্পগুলোতে ধৈর্য্যের ভূমিকা অপরিসীম। পৃথিবীর প্রতিটি সফল মানুষ কোনো না কোনো সময় কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন। তারা যদি ধৈর্য্য হারাতেন, তবে ইতিহাস বদলে যেত। তাই বলা যায়—“যে ধৈর্য্য ধরে পথ চলে, গন্তব্য একদিন তারই হয়।” এই উক্তি আমাদের লক্ষ্যপানে অবিচল থাকতে অনুপ্রাণিত করে।
ধৈর্য্য শুধু বড় সাফল্যের জন্য নয়, দৈনন্দিন জীবনেও অপরিহার্য। সম্পর্ক, পরিবার ও সমাজে শান্তি বজায় রাখতে ধৈর্য্যের প্রয়োজন হয়। “ধৈর্য্যই মানুষের চরিত্রের আসল সৌন্দর্য।” এই কথাটি আমাদের মানুষ হিসেবে আরও সুন্দর করে তোলে।
শেষ পর্যন্ত বলা যায়, ধৈর্য্য কোনো দুর্বলতা নয়, বরং এটি শক্তির পরিচয়। যে ব্যক্তি ধৈর্য্য ধারণ করতে পারে, সে জীবনের যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম। তাই নিজের জীবনে ধৈর্য্যকে সঙ্গী করুন, কারণ ধৈর্য্যই আপনাকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবে।
বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে মনোবল শক্ত করাটাই বাঞ্চনিও। কেননা খারাপ সময় শীগ্রই ফুরিয়ে যাবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দান করুন-আমিন)
ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণে সফল জীবন

