সাগরের নাম কেন হলো লোহিত সাগর?
এত গভীর নীল জল তবুও-এ সাগরেররের নাম কেন হলো লোহিত সাগর? লোহিত সাগরের তলদেশে ধারণ করে আছে এক চমৎকার প্রাণের রাজ্য। ডুবো পাহাড় আর প্রবাল রাজ্যের বিভিন্ন বিন্যাস এ উদ্যানের শোভা বাড়িয়েছে অনেক গুন। এ সাগরের আবস্থান এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের মাঝামাঝি স্থানে, সাগরাটির দক্ষিনে ভারত মহাসাগরের সাথে মিলিত হয়েছে এবং উত্তরে রয়েছে সিনাই উপদ্বীপ। ভারত মহাসাগর ও লোহিত সাগরের মিলনস্থলের একপাশে ইয়েমেন, অন্য পাশে ইথিওপিয়া এবং উত্তর পশ্চিমে রয়েছে মরু প্রান্তর এবং দক্ষিণে পর্বতময়। প্রতিটি পর্বতের অনুমানিক গড় উচ্চতা ২৬৪২ মিটার। এ পর্বতমালা সৌদি আরব থেকে শুরু করে সিনাইপার হয়ে আফ্রিকা মহাদেশের নুবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।
ভূমি প্লেট সরে যাওয়ার কারণে এ সাগরের সৃষ্টি হয় বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়, এ সাগরের জন্ম প্রায় ৩ কোটি বছর পূর্বে। ঐ সময় আরব উপদ্বীপ আফ্রিকা থেকে সরে যেতে শুরু করে। তখন তৈরি হয় ছোট ফাটল, এই ছোট ফাটলটি তখনই সাগর জলে ভরে যায়। প্রকৃতি এ পর্যন্ত এসেই থেমে থাকেনি, ২ কোটি বছর আগে আবার ভূমির নড়াচড়া শুরু হয়। আফ্রিকা থেকে ভাগ হওয়া আরব উপদ্বীপ উত্তরে সরে যেতে থাকে। এই যাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হয় তুরস্কের ভূমি দ্বারা, আরব উপদ্বীপ যাত্রা শুরু করে পূর্ব দিকে। আরো একটা খাঁড়ির সৃষ্টি হয়। এই খাঁড়িটি ইসরাইলের উত্তর অঞ্চলে সৃষ্ট এবং এটি জর্ডান উপত্যকা হয়ে ডেড সী পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। সর্বশেষে এর বিস্তৃতি ঘটে এইলাট উপসাগর হয়ে সিনাই-এর দক্ষিণপ্রান্ত রাস মোহাম্মদ পর্যন্ত।
লোহিত সাগরের পৃষ্ঠদেশের ক্ষেত্রফল প্রায় ১,৭৪,০০০ বর্গকিলোমিটার। সাগরটি প্রায় ১,৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সর্বাধিক ৩০০ কিলোমিটার প্রশস্ত। এটি মধ্যভাগে সর্বোচ্চ ২,৫০০ মিটার গভীর এবং এর গড় গভীরতা প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত।

ফেসবুকে বাজে ম্যাসেজ পাচ্ছেন? ব্যাবস্থা নিবে পুলিশ।
সৌদী আরবের পশ্চিমে লোহিত সাগরে ক্ষুদ্র উদ্ভিদ থাকায় কিছু কিছু স্থানে সাময়ীক সময়ের জন্য পানি লাল বর্ণের দেখা যায়। লোহিত সাগরে পানিতে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে, এগুলো বাতাস থেকে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে ট্রিকোডেসামিয়াম রিথ্রিয়াম নামে এক ধরনের অজৈব যৌগ গঠন করে যার ফলে এর রং লাল হওয়ায় কিছু কিছূ স্থানে এই সাগরের পানি লাল দেখায় তবে এটা সবসময় দেখা যায় না, তাই এ সাগরের নাম লোহিত সাগর দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রায় ১০০০ প্রজাতির অমেরুদণ্ডী প্রাণীর বাসবাস করে থাকে এবং আরও ২০০ জাতের প্রবাল ও এক হাজারেও বেশি প্রজাতির মাছে পরিপূর্ণ। এটা আনুপাতিক হারে বিবেচনা করলে ব্যাপক ।







