দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা
দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা
পুরুষের দৃষ্টি হেফাজত ও হিজাব: ইসলামী দৃষ্টিকোণ
ইসলামের নির্দেশনার আলোকে দৃষ্টি হেফাজত করা মানে কেবল চোখের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ নয়; এটি মানুষের নৈতিকতা, মনোভাব এবং সমাজে সম্মানের প্রতিফলন। কুরআনে সূরা নূরের ৩০-৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহর নির্দেশনায় প্রথমে পুরুষদের জন্য দৃষ্টির হিজাব এবং লজ্জাস্থানের হেফাজতের কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন, “হে নবী! মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।” (সূরা নূর, আয়াত-৩০)
এই আয়াতের প্রথম নির্দেশনা হলো পুরুষদের দৃষ্টি নত রাখা। অর্থাৎ শুধুমাত্র চোখের নজরকে সঠিক সীমার মধ্যে রাখা। দ্বিতীয় নির্দেশনা হলো লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, যা মানে পুরুষদের তাদের যৌন সংক্রান্ত ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ করা। এই নিয়ন্ত্রণ কেবল দেহ নয়, অন্তরের নিয়ন্ত্রণকেও বোঝায়। একজন পুরুষের জন্য নিজ স্ত্রী ব্যতীত অন্য নারীর সৌন্দর্য বা দেহের আকৃতি অনুভব করা সম্পূর্ণ হারাম। যদিও দুনিয়ার আইন চোখের তুচ্ছ অশ্লীল দৃষ্টিকে প্রমাণ করতে পারে না, কিন্তু আল্লাহর দরবারে এমন দৃষ্টির জন্য কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একবার হজরত আলী (রাঃ)-কে বলেন, “হে আলী! তুমি দৃষ্টির পর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ অনিচ্ছাকৃতভাবে যে দৃষ্টি পড়ে তার জন্য তুমি ক্ষমা পাবে। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ নয়।” (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাউদ, দারেমী, মিশকাত: ৩১১০)
এখান থেকে বোঝা যায় যে, চোখের নিয়ন্ত্রণই মানব চরিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেমন নারীর জন্য দেহের পর্দা বাধ্যতামূলক, তেমনি পুরুষের জন্য দৃষ্টির পর্দা প্রয়োজন। বাহ্যিক পর্দা দেহকে আচ্ছাদন করে, চোখ ও মনকে কন্ট্রোল করার মাধ্যমে তাওয়া বা আল্লাহ ভীতির মাধ্যমে অন্তরকে হেফাজত করা যায়।
চোখের হিফাজত মানে শুধুমাত্র চোখে অশ্লীল ছবি বা নারীর প্রতি অবাঞ্ছিত দৃষ্টি না ফেলা নয়, বরং মন ও অন্তরকে বিশৃঙ্খলা থেকে রক্ষা করা। এটি সামাজিক পরিপূর্ণতা ও নৈতিকতার প্রতিফলন। দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করলে একজন পুরুষ আত্মশৃঙ্খলাবদ্ধ হয় এবং সমাজে সম্মান বজায় থাকে।
এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা যায়, নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য আল্লাহর নির্দেশনা সমানভাবে প্রযোজ্য। নারীর জন্য দেহের পর্দা যেমন অপরিহার্য, তেমনি পুরুষের জন্য দৃষ্টির পর্দা অপরিহার্য। এই দুই প্রক্রিয়া একত্রে কাজ করলে সমাজে নৈতিকতা, শৃঙ্খলা এবং পরিপূর্ণতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
অতএব, কেবল বাহ্যিক আচার-ব্যবহার নয়, অন্তর ও মন নিয়ন্ত্রণও ইসলামী নৈতিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দৃষ্টি হেফাজত, লজ্জাস্থান রক্ষা এবং পর্দা—এগুলো মিলিতভাবে একজন মুসলিমের পূর্ণতা ও পরিপূর্ণতা নিশ্চিত করে।
দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা দৃষ্টি নত করা ইসলামের চমকপ্রদ নির্দেশনা
গুম প্রতিরোধে নতুন অধ্যাদেশ জারি

