News

জমা খারিজ সহজ ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা

জমা খারিজ সহজ ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা

জমা খারিজ হলো ভূমি প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যেখানে যৌথ মালিকানাধীন জমিকে বিভক্ত করে নতুন করে পৃথক খতিয়ান (Record/Ownership Document) তৈরি করা হয়। অর্থাৎ, একাধিক মালিকের যৌথ খতিয়ানে থাকা জমির কোনো অংশ যখন হস্তান্তর, বণ্টন, বিক্রি বা উত্তরাধিকার সূত্রে আলাদা হয়ে যায়, তখন সেই অংশটি মূল খতিয়ান থেকে পৃথক করে নতুন মালিকের নামে নতুন খতিয়ান খোলা—এটিকেই জমা খারিজ বলা হয়।


কেন জমা খারিজ প্রয়োজন?

জমা খারিজের মূল উদ্দেশ্য হলো জমির মালিকানা নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো ধরনের বিরোধ বা বিভ্রান্তি না থাকা। জমা খারিজ করলে:

  • আলাদা মালিকের আলাদা জমির রেকর্ড নিশ্চিত হয়
  • জমির পরিমাণ, সীমানা, মালিকানা স্পষ্ট থাকে
  • জমি বিক্রি, দান, বণ্টন বা উত্তরাধিকার প্রক্রিয়া সহজ হয়
  • ভবিষ্যতে নথিপত্র যাচাই করা সহজ হয়
  • ভূমি বিরোধ অনেকটাই কমে আসে

জমা খারিজ সাধারণত যেসব কারণে করা হয়

  1. জমি বণ্টন (Partition)
    পরিবারের মধ্যে জমি ভাগ হলে প্রতিটি অংশীর জন্য আলাদা খতিয়ান প্রয়োজন হয়।
  2. জমি বিক্রয় বা হস্তান্তর (Transfer)
    বিক্রি করা অংশটি আলাদাভাবে নতুন মালিকের নামে খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করতে হয়।
  3. উত্তরাধিকার সূত্রে (Inheritance)
    মালিক মারা গেলে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে জমি ভাগ হলে তাদের নামে নতুন খতিয়ান করতে হয়।
  4. দায় ও বন্ধক মুক্তকরণ
    বন্ধক বা দায়মুক্ত জমির ক্ষেত্রে আলাদা নথি তৈরি হয়।

জমা খারিজের আইনি ভিত্তি

বাংলাদেশে জমা খারিজ ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি স্বীকৃত ও বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা। মালিকানা পরিবর্তিত বা বিভক্ত হলে এটি করা না হলে:

  • ভবিষ্যতে মালিকানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়
  • হস্তান্তর বা রেজিস্ট্রি করতে সমস্যা হয়
  • সরকারি রেকর্ডে পুরনো মালিকানা থেকে জমি পৃথক হয় না

সুতরাং আইনগতভাবে জমা খারিজ একটি অপরিহার্য ধাপ।


জমা খারিজের মাধ্যমে যে নথি তৈরি হয়

জমা খারিজ সম্পন্ন হলে যে নথিগুলো তৈরি বা আপডেট করা হয়, সেগুলো হলো—

  • নতুন খতিয়ান (CS, SA, RS বা BS অনুযায়ী)
  • দাগ নম্বর আপডেট
  • মৌজা ও সীমানা সংশোধন
  • নতুন মালিকানা রেকর্ড

এগুলো পরবর্তীতে জমি সংক্রান্ত সব কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


জমা খারিজ না করলে সমস্যা কী হতে পারে?

  • মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব
  • জমি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে জটিলতা
  • নামজারি সমস্যা
  • সরকারি রেকর্ডে ভুল তথ্য রেখে ভবিষ্যতে মামলা-মোকদ্দমা
  • উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বিরোধ

জমা খারিজের আবেদন কোথায় করতে হয়?

জমা খারিজের আবেদন সাধারণত করা হয়—

  • ইউনিয়ন ভূমি অফিস
  • পৌরসভার ভূমি শাখা
  • উপজেলা ভূমি অফিস
  • এসি ল্যান্ড (AC Land) কার্যালয়ে

বর্তমানে এটি অনলাইনে (land.gov.bd) থেকেও করা যায়।


যে কাগজপত্র প্রয়োজন

  • জমির দলিল
  • খতিয়ান
  • দাগ/মৌজা রেকর্ড
  • নামজারি কপি
  • উত্তরাধিকার সনদ (যদি প্রযোজ্য)
  • বিক্রয় বা দানপত্র
  • সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের ফটোকপি

চূড়ান্ত মুখ্য বিষয়

জমা খারিজ হলো জমির মালিকানা বিভাজন ও নথি সংশোধনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। মূল খতিয়ান থেকে জমির কোনো অংশ আলাদা করে নতুন মালিক বা নতুন জোতের নামে পৃথক খতিয়ান তৈরি করাই জমা খারিজের উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে জমির রেকর্ড সঠিক থাকে, আইনগত জটিলতা কমে এবং ভবিষ্যতের সব লেনদেনে সুনিশ্চিত সুবিধা পাওয়া যায়।

জমা খারিজ সহজ ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা জমা খারিজ সহজ ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা জমা খারিজ সহজ ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা জমা খারিজ সহজ ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা

সিকস্তি কাকে বলে?

কিস্তোয়ার কাকে বলে?

সময়ের সংলাপের ফেইসবুক পেইজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *