আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে
আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে
আয়রন আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারী, কেননা আয়রন শরীরের হিমোগ্রোবিন তৈরী করে থাকে। তাই হিমোগ্লোবিন তৈরীর জন্য আয়রন অত্যাবশ্যক। হিমোগ্লোবিন হলো আমাদের দেহের প্রয়োজনীও প্রটিন যা লাল রক্তকণিকার মধ্যে থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজের সরবরাহ করে থাকে। রক্তের বিভিন্ন উপাদান বর্ণহীন হয়ে থাকে। কিন্তু হিমোগ্লোবিন রক্তকে লাল করে থাকে।
মানবদেহে হিমোগ্লোবিন এর মতো আরও একটি উপাদান রয়েছে যা আমাদের দেহের মাংশপেশিতে থাকে যাহার নাম মায়োগ্লোবিন। আমাদের দেহে এই মায়োগ্লোবিন তৈরী করে থাকে আয়রন জাতীয় উপাদানে। আয়রনের আভাবে রক্তস্বল্পতা সমস্যা হয়ে থাকে।
আমাদের জানা দরকার যে মানব দেহে কতটুকু আয়রনের উপস্থিতি প্রতিদিনের থাকা দরকার। একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর জন্য প্রতিদিন রক্তে ১২ থেকে ১৫ গ্রাম আয়রন দরকার । একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের জন্য ১৩ থেকে ১৭ গ্রাম আয়রন দরকার এবং একজন শিশুর জন্য ১১ থেকে ১৬ গ্রাম আয়রন থাকা দরকার। তবে গর্ভবতী মহিলাদের দৈনিক ২৭ মিলি গ্রাম আয়রন থাকা প্রয়োজন।
আয়রনের আভাবের ফলে শরীর ক্লান্ত, দুর্বল এবং এর পাশাপাশি খিটখিটে মেজাজ হয়ে থাকে। সাধারনত গর্ভবতী নারী এবং শিশুদের আয়রনের ঘাটতিজনিত অ্যানেমিয়া হয়ে থাকে। আয়রনের অভাবে গর্ভবতী মহিলাদের অনিয়মিত গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আয়রন সাধারনত দুই ধরনের (১) প্রাণিজ আয়রন (২) উদ্ভিদ আয়রন। আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য সাধারনত এই দুই ধরণের আয়রন গ্রহন করা প্রয়োজন। আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে
আয়রনের উৎস যে সব খাবারে
কলিজাঃ- |
আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে রয়েছে তার ভিতরে কলিজা অন্যতম । এছাড়াও কলিজাতে রয়েছে খনিজ লবন ও প্রটিন জাতীয় উপাদান। গরুর কলিজায় আয়রনের পরিমান অনেক বেশি থাকে। গবেষনায় দেখা গেছে গরুর মাংসে ৫ মিলিগ্রাম আয়রনের উপস্থিতি রয়েছে। তাছাড়াও লাল মাংসেও প্রচুর আয়রন রয়েছে।
ছোলা |
ছোলা আমাদের দেহের আয়রনোর ঘাটতি পূরন করে থাকে। এক কাপ ছোলায় ৫ মিলি গ্রাম আয়রন থাকে। ছোলায় প্রচুর পরিমাণে প্রটিনের উপস্থিতি রয়েছে। আয়রনের ঘাটতি পূরনে ছোলা হতে পারে আদর্শ খাবারের ভিতরে একটি। নিয়মিত ছোলা খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। এবং ছোলা হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
ডাল |
আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে তাহার ভিতরে ডাল একটি অন্যতম। ডালে আয়রনের ভালো উৎস রয়েছে। এছাড়াও ডালে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। ডাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায়তা করে থাকে। যার ফলে রক্তের সুগার লেভেল ঠিক রাখতে সহায়তা করে থাকে। ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।
পালংশাক |
আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে রয়েছে তার ভিতরে পালংশাক একটি অন্যতম খাদ্য উপাদান। পালংশাকে রয়েছে আয়রনের সাথে সাথে প্রচুন ভিটামিন , মিনারেল , ক্যালিসিয়াম সহ আরও অনেক উপাদনা। রান্না করা পালংশাকের পুষ্টি উপাদান খুব সহজেই শরীর শোষণ করে নিতে সক্ষম। বাচ্চাদের জন্যও পালংশাক খুব উপকারী । রান্না করা এক কাপ সমপরিমাণ পালংশাকে প্রায় ৬ মিঃগ্রাঃ আয়রন থাকে।
কুমাড়ার বিচি |
কুমড়ার বিচি খাওয়া যায় তা আমরা অনেকেই জানিনা। আমরা আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেই এই কুমড়ার বিচিকে। কিন্তু আমরা জানলে অবাক হব যে আয়রনের উৎস যে সকল খাবারে রয়েছে তার ভিতরে কুমড়ার বিচি অন্যতম একটি। সুস্বাদু কুমড়ার বিচি রান্না করে, সালাদের সাথে, ভেজে অথবা সিদ্ধ করে খাওয়া যায়।
এছাড়াও অরো কিছু আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রয়েছে যেমনঃ- কাজুবাদাম, কিশমিশ, ডিমের কুসুম, টমেটো, শিমের বিচি ইত্যাদি। শরীরে আয়রনের পরিমাণ ঠিক রাখতে আয়রন জাতীয় খাবারের সাথে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে। আয়রন জাতীয় খাবার খেলে কারও সমস্যা অনুভব হলে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

Pingback: ডায়েট করেও যখন ওজন কমেনা - সময়ের সংলাপ